দেশে-বিদেশে ভ্রমণ করতে সবাই ভালোবাসে । অবকাশ যাপনের সময়টুকু হয়ে উঠে শুধু নিজের বা নিজেদের । তবে প্রবল ইচ্ছাটা কখনো কখনো লিভে যায় , বিশেষ করে বিদেশে ভ্রমণ করার ক্ষেত্রে । সামর্থ্য ও মন চাইলে ভিসা নিয়ে জটিলতার কালো মেঘ নামে । কিন্তু যদি জানেন আপনার সবুজ পাসপোর্ট দিয়ে মালদ্বীপসহ পৃথিবীর অনেক দেশ ঘুরতে যেতে পারবেন । কোন প্রকারের জামেলা ছাড়ায় ।
আমাদের দেশে কত রকমের পাসপোর্ট রয়েছে
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ৪ প্রকারের ভিসা আছে । তবে বাংলাদেশে চালু রয়েছে ৩ রঙের পাসপোর্ট । ২০২০ সালে ই-পাসপোর্ট চালু করে বাংলাদেশ । কিন্তু নাগরিকদের জন্য আগের মতোই ৩ রঙের পাসপোর্ট চালু রেখেছে সরকার ।
সবুজ পাসপোর্ট
এটি বাংলাদেশের শুধু নাগরিকদের জন্য চালু করা হয়েছে । এই রঙের পাসপোর্টে বিদেশে ভ্রমণের জন্য শুধুমাত্র দেশের ভিসার প্রয়োজন হয় ।
নীল পাসপোর্ট
এই পাসপোর্টকে বলা হয় অফিসিয়াল পাসপোর্ট । সরকারী কাজে কোন কর্মকর্তা দেশের বাইরে ভ্রমণ করতে হলে এই অফিসিয়াল পাসপোর্ট ব্যবহার করা হয় ।
লাল পাসপোর্ট
রাষ্ট্রপ্রধান, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীসভার সদস্য, সংসদ সদস্যরা ।সেই সঙ্গে আদালতের বিচারক, সরকারী সার্ভিস কমিশনের প্রধান এবং বাংলাদেশি মিশনের কর্মকর্তারা লাল পাসপোর্ট পেয়ে থাকেন ।
সাধারণ কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়াই যেতে পারেন সব দেশে ।
অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীরাও বিভিন্ন দেশে এ সুযোগ পেয়ে থাকেন ।
ভিসা সম্পর্কে বিভিন্ন রকমের তথ্য
বাংলাদেশের পাসপোর্টে মূলত যেই ধরনের ভিসা কিংবা ভিসার সুবিধা পাওয়া যাবে । ভিসামুক্ত প্রবেশ ২ দেশের মধ্যে সরাসরি ভ্রমণের অনুমতি দেয় । এর মাধ্যমে বৈধ পাসপোর্ট থাকলেই এইসব দেশে প্রবেশ করা যায় । বর্তমানের বাংলাদেশে পাসপোর্টধারী ব্যক্তিরা আগাম ভিসা ছাড়া Bahamas, Barbados, British Virgin Islands, Bhutan, Fiji, Haiti, jamaica, Micronesia এর মতো বিশ্বের ১৯ টি দেশে ভ্রমণ করতে পারবেন । তাছাড়া কিছু দেশ ও অঞ্চলে অন এরাইভাল ভিসার সুবিধা পায় বাংলাদেশীরা । কিছু দেশের ক্ষেত্রে পাবেন ই-ভিসা ।
আরো পড়ুনঃ কোন প্রকার সিম কার্ড ও ইন্টারনেট ছাড়ায় চলবে ভিডিও
অন এরাইভাল ভিসা কি
বাংলাদেশীরা বিমান বন্দরে নামার পর যে ভিসার সুবিধা পান সেটি হচ্ছে মূলত অন এরাইভাল ভিসা । এই তালিকা বিভিন্ন সময় পরিবর্তন হতে পারে । Nepal, Colombia, Sri Lanka, Barbados, Madagascar, Bolivia সহ ১৭ টি দেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে অন এরাইভাল ভিসা পাওয়া যায় । এছাড়াও কিছু দেশের ভিসা নীতিমালা এবং শর্তাবলী পরিবর্তন হতে পারে । তাই ভ্রমণের আগে নিশ্চিত হয়ে নেওয়া উচিত । তথ্য নিশ্চিত করতে নিকটস্থ দেশটির সরকারী ওয়েবসাইট চেক করে নেওয়াটাই ভালো ।
ই-ভিসা কি
ভিসা পাওয়ার একটি সুবিধাজনক ভিসা হলো ই-ভিসা । ৪৬ টি দেশে ভ্রমণের আগে বাংলাদেশের নাগরিকদের ইলেক্ট্রনিক ভিসা বা ই-ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে । এই ভিসার জন্য অনলাইনে আবেদন করা যায় বিভিন্ন দেশের প্রক্রিয়া করানোর সময়, ফী এবং বৈধতা পরিবর্তন হতে পারে । সাধারণত এই ভিসার নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে ৩০ দিন থেকে ৫ বছর পর্যন্ত । কিছু কিছু দেশ উদ্দেশ্য ভেদে ই-ভিসা দিয়ে থাকে ।
কোনো কোনো দেশ ব্যবসাইয়িক উদ্দেশ্যে আবার কোনো কোনো দেশ ভ্রমণের উদ্দেশ্যে দিয়ে থাকে । এদিকে থাইল্যান্ডে ঘোষণা দিয়েছে আগামী বছর থেকে বাংলাদেশীদের জন্য ই-ভিসা চালু করবে । কোনো বাংলাদেশী ব্যক্তির ইউএস, কানাডা, ইউকে বা শেনজেন ভিসা থাকে, তিনিও ৩ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুর্কিতে ই-ভিসা পাবেন ।
ইটিএ বা এন্ট্রি পারমিট ভিসা কি
শুধু পাসপোর্ট দিয়ে ভিসা ছাড়া নাগরিকদের জন্য এটি একটি ডিজিটাল এন্ট্রি পারমিট । দ্রুত অনলাইনর মাধ্যমে অল্প মেয়াদে দেশান্তরের অনুমতি পাওয়া যায় । এটি শুধু বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য দিচ্ছে কেনিয়া সরকার । এছাড়াও বাংলাদেশের পাসপোর্ট ধারীদের ১৪৬ টি দেশের ভ্রমণের আগে নিয়মিত ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে ।
GCC Visa কি
এটি মূলত ইউরোপের শেনজেন ভিসার আওতায় উপসাগরীয় ৬ দেশে নতুন এই ভিসা চালু করেছে । ফলে এক ভিসা দিয়ে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতার, বাহরাইন এবং কুয়েত ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা । প্রতিটি দেশের জন্য বিমান ও দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখতে জনপ্রতি ১৫০০ দেরহাম থেকে ভ্রমণ প্যাকেজ শুরু হবে । তবে এই ভিসার জন্য কোনো কোনো দেশ বিশেষ সুবিধা পাবে । কিংবা বাংলাদেশিদের জন্য প্রক্রিয়া কি হবে তা এখনো জানা যায়নি ।
কয়েকটি গণমাধ্যম বলছে , আগামী বছরের শুরুর দিকে নতুন এই ভিসা পদ্ধতি চালু হতে পারে ।