যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান National Institutes Of Health. এখানে একটি আর্টিকেল পাবলিশ হয়েছে ২০২২ সালে । এবং এটিতে বলা হয়েছে বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রতি হাজারে ১১.৩৯ জন মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে ।
স্ট্রোক মানে কিঃ কোনো কারণে যখন ব্রেনের কোন অংশে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় । তখন ব্রেনের সেই অংশের কিছু নিউরোন ড্যামেজ হয়ে মরে যায় । তখন এই অবস্থাটিকে বলা হয় স্ট্রোক ।
রক্ত সরবরাহ ২ ভাবে বন্ধ হতে পারে
১. রক্তনালি ছিঁড়ে ।
২. চর্বি দিয়ে ব্লক হয়ে ।
স্ট্রোকের উপসর্গগুলো হলো
- হঠাৎ শরীরের একদিকের মুখ, হাত ও পা দুর্বল বোধ করা ।
- চিন্তাশক্তি লোপ পায় ।
- কথা বলতে সমস্যা হয় ।
- দেখতে সমস্যা হয় ।
স্ট্রোকের মূল কারণ কি কি
- অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেওয়া ।
- অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস হওয়া ।
- ধূমপান করা ।
- স্থুলতা ।
- রক্তের উচ্চ কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়া ।
- কিডনির রোগ থাকলে ।
- অবৈজ্ঞানিক খাদ্যভ্যাস হলে ।
- প্রচণ্ড মানসিক চাপ / উত্তেজনা / রাগ থাকলে ।
স্ট্রোকের মূল চিকিৎসা কি কি
কিছু ওষুধ সেবন ও ফিজিওথেরাপি । নিয়মিত ফিজিওথেরাপি কেউ যদি গ্রহণ করেন ও নিয়মিত ওষুধ খান । তাহলে অধিকাংশ রোগী সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন । এবং বাকিরা অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন ।
স্ট্রোক কি প্রতিরোধ করা সম্ভব
২০১৬ সালে মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেটে একটি আর্টিকেল পাবলিশ হয়েছিল । সেখানে বলা হয়েছে বিশ্বের যতগুলো স্ট্রোকের ঘটনা ঘটে তার ৯০% প্রতিরোধ করা সম্ভব । স্ট্রোকের পিছনে সবথেকে বড় কারণ হচ্ছে অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ এবং অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস । এবং এই রোগ ২ টা প্রতিরোধ করা যায় না । তার কারণ হচ্ছে মানুষের ভুল ভাবে জীবনযাপন করা । শুধুমাত্র ওষুধ দিয়ে এই রোগ গুলোর চিকিৎসা করা হয় । তার পরেও রোগ গুলো সবসময় অধিকাংশ ক্ষেত্রে থাকে নিয়ন্ত্রণহীন ।
২০২৩ সালের বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবসে খবরে বলা হয়েছে যে, ওষুধ খেয়েও ৮৮% রোগীর উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নেই ।
একি বছর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসে খবরে বলা হয়েছে যে, ওষুধ খেয়েও নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ ৯২% রোগী ।
আরো পড়ুনঃ যে যে কারণে ইম্পোস্টার সিনড্রোম হয় এবং ইম্পোস্টার সিনড্রোম থেকে বের হয়ে আসবেন ।
স্ট্রোক প্রতিরোধ করবেন কিভাবে
- সবসময় শোকরগোজার থাকুন ।
- বিজ্ঞানসম্মত খাদ্যভ্যাস গড়ে তুলুন ।
- প্রতিদিন ৭০% জীবন্ত খাবার খাবেন ।
- প্রানিজ আমিষ কম কম খাবেন ।
- উদ্ভিজ্জ আমিষ বেশি বেশি খাবেন ।
ফাস্টফুড ও সফট ড্রিংকস বর্জন করুন ।
প্যাকেট ও প্রক্রিয়াজাত খাবার বর্জন করুন ।
ভাজা-পোড়া-তৈলাক্ত খাবার বর্জন করুন ।
চিনি, সাদা চাল এবং সাদা ময়দা পুরোপুরি বর্জন করুন ।
তেলের ব্যাপারে সচেতন হন ।
প্রতিমাসে মাথাপিছু আধা লিটারের বেশি তেল ব্যবহার করবেন না ।
ধূমপান পুরোপুরি বর্জন করুন ।
পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম করুন ।
মাঝে মাঝে সূর্যের তাপ শরীরে লাগান ।
খালি পায়ে মাটিতে হাঁটুন ।
নিয়মিত মেডিটেশন করুন ।
যে কোনো ভাবে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন ।
এই কারণগুলো মেনে চললে স্ট্রোক থেকে প্রতিরোধ পেতে পারবেন । এবং ১০০ জনের মধ্যে ৯৮ জনই স্ট্রোক থেকে বেঁচে যাবেন ।