বাংলাদেশে স্টারলিংক ইন্টারনেটের গুরুত্ব ও প্রয়োজন
Internet Teachnology

বাংলাদেশে স্টারলিংক ইন্টারনেটের গুরুত্ব ও প্রয়োজন

মহাশূন্যর প্রাকৃতিক উপগ্রহের পাশাপাশি মানুষের তৈরি বিভিন্ন ধরনের স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ রয়েছে । তবে এই ধরনের স্যাটেলাইট নিয়ে কিন্তু ইন্টারনেট সরবরাহ করা হয় না । কিন্তু স্টারলিংক হলো এমন এক ধরনের স্যাটেলাইট যার মাধ্যমে আমরা ইন্টারনেট সেবা পাবো । এই কারণে পৃথিবীর দুর্গম অঞ্চলেও দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটির । বিশ্বের প্রায় ৫০ টির বেশি দেশে স্টারলিংকের কর্মসূচি রয়েছে । 

বিশ্বজগতের ৬ ধরনের ইন্টারনেট দেখা যায়ঃ

১. ডায়াল-আপ ইন্টারনেট ।

২. DSL ইন্টারনেট ।

৩. স্যাটেলাইট ইন্টারনেট ।

৪. ক্যাবল ইন্টারনেট ।

৫. ওয়ারলেস ইন্টারনেট ।

৬. সেলুলার ইন্টারনেট ।

বিশ্বের অধিকাংশ অঞ্চলেই মানুষ ক্যাবল ইন্টারনেটে সেবা ব্যবহার করে থাকে । ক্যাবল ইন্টারনেট সাধারণত সাবমেরিন ক্যাবল বা অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয় । কিন্তু স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা ক্যাবলের মাধ্যমে দেওয়া হয় না । 

স্টারলিংক কি?

স্টারলিংককে অরবিটাল স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক বলা যায় । এটি স্পেসএক্সের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রোজেক্ট । বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক ২০১৫ সালে এটি চালু করেন । স্পেসএক্সের অধীনে পরিচালিত স্টারলিংকের মূল লক্ষ্য হচ্ছে পৃথিবীর সব স্থানে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা দেওয়া । আর স্টারলিংক হচ্ছে একটি লিও স্যাটেলাইট এর পূর্ণরূপ হলো  Low Earth Orbit Satellite . পৃথিবী থেকে অনেকটা কাছাকাছি অবস্থান করার জন্য এই স্যাটেলাইটগুলোকে মূলত Low Earth Orbit Satellite বলা হয়ে থাকে । সর্বোচ্চ ২০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্বে এই স্যাটেলাইট তথা এই স্টারলিংক অবস্থান থাকে । 

এটি কিভাবে কাজ করে

স্টারলিংক হলো একটি স্যাটেলাইট ভিত্তিক ইন্টারনেট পরিষেবা । এটি সরাসরি Low Earth Orbit Satellite ব্যবহার করে সেবা প্রদান করে থাকেন । স্টারলিংকের কাজ অনেকটা আমাদের বাড়িতে ব্যবহার করা ডিশ টিভির পরিষেবার মতো ।  এখানে আপনাকে স্টারলিংকস ইন্সটল করার জন্য ব্যবহারকারীদের একটি রিসিভার ব্যাবহার করতে হয় । যা একটি মিনি স্যাটেলাইট থেকে সংকেত গ্রহণ করার মাধ্যমে কাজ করে থাকে ।

স্টারলিংক ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা

এই স্যাটেলাইট ইন্টারনেট যে কোন জায়গা থেকে ব্যবহার করা যেতে পারে । কখনো কখনো এর গতি সাধারণত প্রতিশ্রুতির তুলনায় দ্রুত হয়ে থাকে । প্রত্যন্ত অঞ্চল এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে স্টারলিংক ভালো ইন্টারনেট সেবা দিতে পারে । ক্যাবল তার না থাকার জন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় এটি খুব সহজেই পুনরুদ্ধার করা যায় । 

স্টারলিংক
স্টারলিংক

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ব্যবহার কতটা প্রভাব ফেলবে 

ইলন মাস্কের স্টারলিংক বাংলাদেশে এর সেবার আওতায় আনতে যাচ্ছে । গত বছরের জুলাই মাসে বাংলাদেশে স্টারলিংকের প্রযুক্তি এনে পরীক্ষা করা হয় । স্টারলিংকের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের ভিনিয়ক উন্নয়ন কর্তৃপক্ষী নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীর  সাথে বৈঠক করেছে । স্যাটেলাইট ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা দাতার প্রতিষ্ঠান থেকে লাইসেন্স দিতে আগ্রহী সরকার । তাই বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন থেকে তাদের ওয়েবসাইটে একটি গাইড লাইন প্রকাশ করেছে । 

BTRC এর প্রস্তাবিত গাইড লাইনটির নাম দেওয়া হয়েছে ননজিওস্টেশনারি অরবিট স্যাটেলাইট সার্ভিসেস অপারেটর । আগামী ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত এই গাইডলাইনের ওপর মতামত দেওয়া যাবে । আড়িপাতা প্রযুক্তি বোহাল রেখে দেশে স্যাটেলাইট ভিত্তিক ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা চালু করতে চাচ্ছে সরকার । তাছাড়া ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারকে তথ্য দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হবে । এছাড়া যখন তখন সরকারের জারি করা  আদেশও চলতে হবে স্যাটেলাইট কোম্পানিটিকে । 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।